ডাক্তার পর্ব


এক.
হার্টের?
গ্যাস্ট্রোলজির?
ক্যানসারের?
কিছুই বুঝতে পারছি না। আসলে কোন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার খুঁজছেন মোখলেস ভাই ?
এ বিষয়ে প্রশ্ন করার সাহস পেলাম না।
সকাল থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে শুরু করে গোটা ধানমন্ডি চক্কর দিচ্ছি দুজন মিলে। একজন ডাক্তারকে গরুখোঁজা খুঁজছেন মোখলেস ভাই।
তাঁর নাম ডাঃ শরাফত আলী। কোন বিষয়ের ডাক্তার সেটা মোখলেস ভাই খুলে বলেননি। কেন খুঁজছেন সেটাও জানি না।
‘এখন কী করব খসরু?’ ফ্যাসফেসে গলায় জানতে চাইলেন তিনি।
‘চলেন এককাপ করে চা খাই।’ প্রস্তাব দিলাম।
সাথে সাথে ফর্সা মুখটা উজ্জ্বল হয়ে উঠল।
‘ঠিক বলেছিস, চা খেলে বুদ্ধি খুলতে পারে।’
চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে মোখলেস ভাই অবশ্য মত পাল্টালেন, ‘ভাই, দুকাপ কফি দেন।’
‘বললেন না চা খাবেন! ’
‘কফি থাকতে আবার চা কেন?’ কফিতে চুমুক দিয়ে মোখলেস ভাই বললেন।
‘সাথে টাকা আছে তো? আমি আবার মানিব্যাগ আনতে ভুলে গেছি।’
মাথা ঝাঁকালাম।
মোখলেস ভাই বাইরে থাকলে সাথে মানিব্যাগ থাকে না!
থাকলেও সেটাতে টাকা থাকে না!!
টাকা থাকলেও সেগুলো হয় ছেঁড়া নয়ত অচল!!!
‘এই ডা. শরাফতের খোঁজ কিভাবে পাই বলতো? ’ চিন্তিত স্বরে জানতে চাইলেন মোখলেস ভাই।
‘ওষুধের দোকানে জিজ্ঞেস করতে পারেন।’
‘ওষুধের দোকানে?’
‘হ্যাঁ। ওদের ওখানে হরেক রকম ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন যায়। কাজেই ওরা বলতে পারবে কোন ডাক্তারের চেম্বার কোন খানে?’

দুই.
ওষুধের দোকানেই গিয়েছিল ওসমান।
আমার চাচাতো ভাই। ইলেকট্রনিক কাউন্টারের সামনে বসা এক লোক টাকা নিয়ে রিসিট দিচ্ছিল। সেই রিসিট দেখে আরেক সেলসম্যান ওষুধ দিচ্ছিল।
‘সাতশত বিশ টাকা দিন।’
ক্যাশ রেজিস্টার থেকে দ্রুত ইলেকট্রনিক মেমো বের হয়ে এলো।
‘কেন?’ ওসমান জানতে চাইল।
‘ওষুধের দাম।’
‘এখানে কি ওষুধের নাম লেখা আছে?’ হতভম্ব হয়ে জানতে চেয়েছিল ও।
‘তাই তো দেখছি।’
‘কিন্তু এটা হতে পারে না।’
‘মানে। কী হতে পারে না?’
‘আমাদের বাসায় ডাক্তার ইমরানের দাওয়াত ছিল। তিনি আসতে পারবেন না জানিয়ে লোক মারফত এই চিঠি পাঠিয়ে ছিল।
‘আসবেন না সেটা তো বলেই দিয়েছেন।’
‘সেজন্যই তো এখানে আসা।’
‘মানে?’
‘চিঠিতে ডাক্তার সাহেব কী লিখেছেন সেটা আমরা কেউ পড়তে পারছি না। তাঁর হাতের লেখা এতই পেঁচানো। তাই আপনার কাছে নিয়ে এসেছিলাম। অনেক সাধারণ পাবলিক পড়তে না পারলেও ওষুধের দোকানে সেলসম্যানরা ডাক্তারের লেখা ঠিকই পড়তে পারে। তাই আম্মু চিঠিটা আমার হাতে এখানে পাঠিয়ে দিলেন। যদি আপনারা পড়তে পারেন।’
‘পড়েছি তো। ওষুধও দিয়েছি। সাতশত বিশ টাকা দিন এখন।’ হেসে বলেছিল ওষুধ বিক্রেতা।

তিন.
‘আপনারা ডায়াগনস্টিক স্টোরে খোঁজ নিতে পারেন।’ ওষুধ বিক্রেতা বললেন।
আমরা দাঁড়িয়ে আছি এক ওষুধের দোকানের সামনে। মোখলেস ভাই পকেট থেকে একটা খাম বের করে দোকানদারকে দেখালেন।
‘ভাই, ডাক্তার শরাফত আলী’র চেম্বার কোথায় বলতে পারবেন?’
‘না। আপনি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন।’
‘কেন? ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কেন?’
‘ভালো করে দেখুন। এখানে বেশকিছু পরীক্ষার নাম লেখা আছে। সেগুলো ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই হয়।’
‘তাই তো।’ মোখলেস ভাই খামের উপর লেখাটি পড়লেন।
‘ধন্যবাদ ভাই। কোন কোন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আগে যাওয়া ভালো হবে?’
‘আপনারা আনোয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আগে যান। ওরা বলতে পারে।’
খুঁজতে খুঁজতে সেখানে চলে এলাম আমরা।
কীসের খাম সে বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। ডা. শরাফত আলীকে মোখলেস ভাই কেন খুঁজছেন সেটাও বুঝতে পারছি না।
ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীর প্রচণ্ড ভিড়।
অপেক্ষা করলাম আমরা। নার্স একজনকে প্রসাব পরীক্ষার জন্য একটা বোতল ধরিয়ে দিলো।
‘ওয়াশরুম ওদিকে।’ নার্স দেখিয়ে দিলো।
একটুপরই নাচতে নাচতে ফিরে এল রোগী।
‘আপা, বোতল লাগে নাই। ওখানে টয়েলেটের প্যান আছে। সেখানেই প্রসাব করে আসলাম।’
অনেক কষ্টে হাসি চাপলাম। নার্স রোগীটিকে বকাবকি করছে।
এই সুযোগে আমরা ডেস্কে বসা লোকটির দিকে এগিয়ে গেলাম।
‘ডা. শরাফত …।’ মোখলেস ভাই জানতে চাইলেন।
জবাবে লোকটি ওপর তলায় ইশারা করলো।
‘চারতলায় উঠে ডানে।’
হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম দুজনে।
চারতলায় উঠতেই দেখি বড় চোখের ছবি।
বুঝলাম, শরাফত আলী চোখের ডাক্তার। সরাসরি ভেতরে ঢুকে গেলাম।
সাহেব বললেন, ‘আপনারা বসুন। আমি রোগী দেখছি।’
সত্যিই তাই।
ডাক্তার একজন মাঝবয়সী নারীর চোখ পরীক্ষা করছেন। যন্ত্রের এপাশে রোগিনী। ওপাশে ডাক্তার।
‘ডাক্তার সাহেব আপনাকে দেখে আমার তৃতীয় স্বামীর কথা মনে পড়ে যাচ্ছে।’
‘আপনি কয়টি বিয়ে করেছেন?’ সকৌতুকে জানতে চাইলেন ডাক্তার।
‘জ্বি। দ্বিতীয় বিয়ে করেছি। তৃতীয় বিয়ে করতে মন চাইছে আপনাকে দেখে।’ হেসে বলল রোগিনী।
খুকখুক করে কাশলেন ডাক্তার। যন্ত্র থেকে চোখ সরিয়ে আমাদের দিকে চাইলেন।
‘আপনারা কি চোখ দেখাবেন? একটু পরে আসুন। যে ছেলেটা সিরিয়াল দেয়, সে আজ আসেনি।’
‘ডা’ শরাফত আলীকে খুঁজছি।’
‘আমি আলী না আমি হোসেন। ডা. শরাফত হোসেন। পাশের বিল্ডিংয়ে একজন শরাফত বসেন। নাক-কান-গলার। খোঁজ নিয়ে দেখুন।’

চার.
নাক-কান-গলার বিশেষজ্ঞই আমার ফুপাতো ভাই নাসিম।
গাজীপুরে চেম্বার। অনেকদিন থেকেই যেতে বলছিল। কাচ্চি বিরিয়ানির অফারও দিয়েছিল।
অফার তো ছাড়া যায় না।
তাই গিয়েছিলাম একদিন ওর চেম্বারে।
নাসিম ভাই আমাকে পাশের ছোট ঘরে বসিয়ে রোগী দেখছিলেন। সবকথাই শুনতে পাচ্ছিলাম।
‘আপনাকে যে ওষুধ লিখে দিয়েছিলাম সেটা কি ব্যবহার করেছেন?’
‘ব্যবহার করেছি কী বলছেন, আমি তো ওটা খেয়ে ভালোও হয়ে গেছি। উফ! কী সুন্দর স্বাদ। যেন মধুর রস।’ তরুণী রোগী হেসে বলেছিলেন।
‘আপনি ওষুধটা খেয়েছেন!’
‘হ্যাঁ। আপনিই তো লিখেছিলেন দিনে তিন বার করে ব্যবহার করতে। সেজন্য আমি দিনে তিনবার করে খেয়েছি।’
‘ভালো! ভালো! এবার যে ওষুধ দিচ্ছি সেটা ঠিকমতন প্রেসক্রিপশন পড়ে তারপর ব্যবহার করবেন প্লিজ।’
‘এই ওষুধটাও কি খাবার ওষুধ?’
‘চাইলে আপনি এই ওষুধ কানেও দিতে পারেন। সেটা আপনার অভিরুচি!’
‘এভাবে কেন বলছেন? আমি তো আপনার লক্ষ্মী রোগী। যা বলেন তাই তো মেনে চলি।’ তরুণী ন্যাকা গলায় বলল।
‘না। মেনে চলেন না। এর আগের ওষুধটি ছিল কানের ড্রপ। রোজ দুফোঁটা করে দুই কানে দিতে বলেছিলাম। অথচ আপনি সেই ওষুধ খেয়েছেন। এবার মুখে খাওয়ার ওষুধ দিয়েছি চাইলে এটা আপনি কানের ড্রপ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। সেটা আপনার অভিরুচি!’
রেগেমেগে তরুণীকে বলেছিলেন নাসিম ভাই।

পাঁচ.
লোকটা রাগী রাগী চোখে তাকাল আমাদের দিকে।
‘ডাক্তার সাহেব, ভেতরে আছেন?’ হাসিমুখে বললেন মোখলেস ভাই।
‘আছেন। কী দরকার বলুন?’ রাগী গলাতেই বলল লোকটি।
আমরা দাঁড়িয়ে আছি ডা. শরাফত আলীর চেম্বারে। রোগীদের সিরিয়াল দেওয়া হয় এখানে। যে লোকটা সিরিয়াল দিচ্ছে সেই লোকটার সাথেই কথা বলছি এখন আমরা।
‘দরকার আছে বলেই তো এসেছি।’ মোখলেস ভাই বললেন।
‘রোগী ছাড়া আর কারো সাথে চেম্বারে দেখা করেন না উনি। এমনকি আত্মীয়-স্বজন এলেও না।’ কর্কশভাবে বলল সে।
‘আমরা উনার আত্মীয় নই।’
‘আত্মীয় না হলে আমি কী করব। সেটা আপনাদের প্রবলেম।’
‘তাহলে উপায়?’
‘চেম্বারে উনি বহিরাগত কারো সাথে দেখা করেন না। এমনকি মেডিকেল রিপ্রেজন্টেটিভদের সাথেও না।’
‘কিভাবে দেখা করা যায় উনার সাথে। ব্যাপারটা জরুরি।’
‘দেখা করার উপায় একটাই। এখানে সিরিয়াল নিতে হবে। সিরিয়াল নিন। ভেতরে যান।’
হতাশ হয়ে মাথা নাড়লেন মোখলেস ভাই। আমার দিকে করুণ চোখে তাকালেন। যেন বলতে চাইলেন, দেখলি খসরু এত চেষ্টা করলাম, তবু ভেতরে যেতে পারলাম না।

ছয়.
ভেতরে যেতেই তো চেয়েছিল স্বপ্নিল। আমার দূর সম্পর্কের ভাগ্নি।
হঠাৎ একদিন শখ হলো গিটার বাজানো শিখবে। ফেসবুকে খুঁজে খুঁজে বের করলো শহরে কে ভালো গিটার শেখায়। সেখানে নাম্বার পেয়েছিল অসীম স্যারের।
ফোন করলো একদিন।
‘স্যার, আমি স্বপ্নিল। অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি। আপনার কাছে গিটার শিখতে চাই।’
‘ভালো খবর। চলে এসো একদিন বাসায়। আমি বাসায় গিটার শেখাই। সপ্তাহে দুদিন। রবি আর বুধবারে। ভর্তি ফি দুই হাজার টাকা।’
‘ওকে স্যার। আমি কালই গিয়ে ভর্তি হয়ে আসব। আপনার ঠিকানাটা দিন স্যার।’
ঠিকানা মতন স্বপ্নীল পরদিন বিকেলে অসীম স্যারের বাসার সামনে গিয়ে হাজির হলো।
হাজির তো হলো কিন্তু গেট পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে পারল না। কারণ আর কিছুই না। গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে বিশাল এক কুকুর। ওকে দেখে ঘেউ ঘেউ করলো। জন্ম থেকে যে প্রাণিটা দেখলে স্বপ্নিল সবচেয়ে ভয় পায় তা হলো কুকুর।
‘স্যার, আপনার বাসায় ঢুকতেই পারলাম না। বিকেলে গিয়েছিলাম। বড় একটা কুকুর দাঁড়িয়েছিল গেটের সামনে।’
‘ওহ্! টমির কথা বলছ। সে তো খুব শান্ত।’ ওপাশ থেকে অসীম স্যার বলেছিলেন।
‘তবু আমার খুব ভয় লাগে।’
‘ভয়ের কিছু নেই। আমি তোমাকে একটা ছড়া শিখিয়ে দিচ্ছি। তুমি টমির সামনে ছড়াটা মুখস্ত বলামাত্র ও শান্ত হয়ে যাবে, বুঝেছ?’
স্বপ্নিল ছড়াটা শিখে নিল।
পরদিন বিকেলে স্বপ্নিল আবার গিয়েছিল অসীম স্যারের বাসায়।
গেটের সামনে টমি ঘুমিয়ে ছিল।
স্বপ্নিল ভেতরে ভেতরে টগবগ করে ফুটছিল। ছড়াটা কাজ করবে তো? টমি তো ঘুমিয়ে। তাকে জাগানোর জন্য স্বপ্নিল কুড়িয়ে পাওয়া একটা লাঠি দিয়ে কুকুরের শরীরে খোঁচা দিল।
সাথে সাথে জেগে উঠে ঘেউ ঘেউ করতে শুরু করেছিল কুকুরটা।
ভয়ে স্বপ্নিল ছড়া-টড়া সব ভুলে গিয়েছিল।
পালাতে চেয়েছিল ও কিন্তু তার আগেই টমি ওর ডান পায়ে কামড় বসিয়ে দিয়েছিল।
নাভিতে নিতে হয়েছিল অনেকগুলো ইনজেকশন।
শীতে এখনো মাঝে মাঝে ব্যথার কাতরে ওঠে স্বপ্নিল।

সাত.
‘কোন পাশে ব্যথা হয় আপনার? বা পাশে না ডান পাশে?’ ডা. শরাফত আলী প্রশ্ন করলোেন। আমাদের দিকে চোখ তুলেও তাকালেন না। সামনে রাখা ফাইলে তাঁর চোখ নিবদ্ধ।
বেয়াদপ সহকারীটা আমাদের হাতে একটা ফাইল ধরিয়ে তবে ভেতরে ঢুকতে দিয়েছে।
রোগী না হয়েও মোখলেস এখন রোগী।
বক্ষব্যাধি!
ডা. শরাফত আলী একজন বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ।
‘ব্যথা কি বুকের উপরে না নিচে? কেমন ব্যথা ওঠে- চিনচিন না তীব্র?’
‘ব্যথা ডানেও না বামেও না। ব্যথা হলো উপরে মানে মাথায়।’ ধীরে ধীরে বললেন মোখলেস ভাই।
‘মানে? বুঝলাম না?’ ডাক্তার এবার মুখ তুলে আমাদের মুখের দিকে চাইলেন।
‘এই খামটা আমি কয়েকদিন আগে রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছি। খামের উপরে ডা. শরাফত আলী নাম লেখা। ভিজিট, বিভিন্ন প্রকার টেস্টসহ বিভিন্ন খাতে মোট সাড়ে বারো হাজার টাকা রয়েছে।’
একটা খাম এগিয়ে দিলেন মোখলেস ভাই।
আমি দেখলাম, সত্যি সত্যি ডা. শরাফতের নাম লেখা রয়েছে খামের উপর। কোন হিসাবে কত টাকা তিনি পেয়েছেন তা লেখা আছে।
মুগ্ধ হলাম। অন্য কেউ হলে টাকাটা মেরে দেওয়ার চিন্তাই করত। অন্তত এত কষ্ট করে ডাক্তারের চেম্বার পর্যন্ত এসে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা নিশ্চয়ই ভাবত না।
‘ওহ্! এটা আপনি পেয়েছেন। আমি ভেবেছি, টাকাটা হারিয়ে গেছে।’ হাত বাড়িয়ে খামটা নিলেন ডাক্তার। খামখুলে টাকা বের করলেন তিনি। গুনলেন।
ভাবলাম, এই বুঝি আমাদের কিছু টাকা বখশিস দেবেন।
অন্তত চা অফার করবেন।
‘এখানে সাড়ে এগারো হাজার আছে।’ ধীরে ধীরে বললেন।
‘হ্যাঁ । এক হাজার টাকা কম আছে।’
‘তার মানে এক হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে- এই তো বলবেন। অসুবিধা নেই। ঐ এক হাজার টাকা আপনাদেরকে আমি বখশিস হিসেবে দিলাম।’ হেসে বললেন ডাক্তার।
‘জি খরচ হয়েছে। সেটা আপনার জন্যই।’
উঠে দাঁড়ালেন মোখলেস ভাই। আমাকে ইশারা করলেন উঠতে।
‘দাঁড়ান, দাঁড়ান। বুঝলাম না। এক হাজার টাকা আমার জন্য খরচ হয়েছে। মানে।’
‘আপনার সহকারী আমাদের ভেতরে ঢুকতে দিতে চাইছিল না। তাই এক হাজার টাকা ভিজিট দিয়ে ভেতরে ঢুকলাম।’
ডাক্তার বোধহয় চমকে গেলেন। কারণ, দেখলাম তার মাথা নিচু হয়ে গেছে।
‘এমন সিস্টেম বানিয়েছেন যে, আপনার টাকা ফেরত দিতে আপনারই টাকা খরচ করতে হচ্ছে। সত্যিই সেলুকাস।’
আমরা বের হতেই সহকারীর সাথে ধাক্কা খেলাম।
‘স্যার নেক্সট রোগী পাঠাবো?’