মাঝে মাঝে
মাঝে মাঝে স্বপ্নে ভরে হৃদয় খাতা
যায় হারিয়ে বৈরি মনের বিষাদগাথা
স্বর্ণচাঁপা ইচ্ছে দোলে উতল প্রাণে
হলদে পাখি নতুন সুরের বার্তা আনে!
মাঝে মাঝে মন ভেসে য়ায় কল্পনাতে
সখ্য পাতি জোছনা তারা চাঁদের সাথে
ইচ্ছেগুলো যায় হারিয়ে অসীম নীলে
দিন কেটে যায় দুঃখ সুখে মিল অমিলে!
মাঝে মাঝে হাতছানি দেয় স্মৃতির বেলা
পিছু ডাকে দোল পার্বণ রথের মেলা…
স্বপ্ন পথিক অঙ্গনেতে বাজায় বাঁশি
শুনে কেন হঠাৎ আমি হই উদাসী?
মাঝে মাঝে সাধ্য বিহীন ভাবনাগুলো
দেয় পুড়িয়ে মনের সকল ইচ্ছে ধূলো
কোলাজ করা আস্থা আশার অনুভূতি
ছড়ায় না আর মাঙ্গলিকের স্বপ্ন দ্যুতি
মাঝে মাঝে কল্পকথার গল্পগাথা
মনে বিছায় অতীত স্মৃতির নকশিকাঁথা
দূর অসীমের খবর আসে ছন্দে গানে
নিজকে হারাই তৃষ্ণাতুরা মায়ার টানে
মাঝে মাঝে শিল্পকলার নিবিড় ভাঁজে
মন বিলাসী উচ্ছলতার মাদল বাজে
বিষণ্নতার দিন চলে যায় অভিসারে
জল বাসরের ভাবনা গাঁথি বীণার তারে
মাঝে মাঝে ভুলের কাঁটায় হই যে ক্ষত
বন্দি বিবেক দ্বিধায় পোড়ে নিত্য কত
টানাপোড়েন ভাবনাতে হই এলোমেলো
ভাবি জীবন চাইল যা…তা সব কি পেলো?
কেন বলো ভালোবাসি
কখনো আকাশ মুগ্ধতা নিয়ে দেখে আমাদের হাসি
বড় অসময় .তবু কেন বলো .ভালোবাসি ভালোবাসি ?
চলে যায় কতো নাগপঞ্চমী আকুতির জলে ভিজে
পদপঙ্কজে আলতা রাঙিয়ে বুঝি না তো করি কি.যে
লীলা চপলার সুনীতি .প্রবাহে আসে যায় কত বেলা
ডিজিটাল মনে ময়ূরী আবহ করে লুকোচুরি খেলা
নদী পুড়ে যায় দখলের তাপে মালাবতী বাঁধে সেতু
দেবিকার সাজে চলে ফুল্লরা ঘরে কাঁদে কালকেতু.
পরিযায়ী দিন শুচিতায় কাটে আশা নিয়ে রাশিরাশি
বৈরী বলয়ে বসে তবু তুমি কেন বলো ভালোবাসি?
বালুকাবেলায় বারনারি ছোটে মায়াবিনী অভিসারে
নিবেদনে ভরা অনুভূতি নিয়ে কেউ কাঁদে চুপিসারে
কুল-বালিকারা যায় না তো ঘাটে নূপুরের সুরে সুরে
খনার বচনে সুফলা সেদিন চলে গেছে আহা দূরে
ঠাকুমা বলে না রূপকথা আর জড়োয়া জোছনা রাতে
মইষালী দিন আহত এখন ইথারীয় পদাঘাতে …
তীর্থ করি না তবু তীর্থের জলে ডুবি আর ভাসি
অনুভবে রাঙা পথে বসে তবু কেন বলো ভালোবাসি?
আলোকিত সুখ ডানা মেলে ওড়ে সভ্যতা খেলে পাশা
বিকশিত মনে ছন্দিত হয় সুরভিত আলো-আশা
জীবন বলয়ে অশনি আবেশে চলে কতো টানাটানি
চলছি তো ছুটে সময়ের টানে কোথা শেষ নাহি জানি
মাধুকরী ক্ষণ নীরবে পোড়ায় বাজে যে বিধুর বাঁশি
টানাপড়েনের সংঘাত নিয়ে, কেন বলো ভালোবাসি!
বুকের ভেতর বৃক্ষছায়া
নষ্ট হলো স্বপ্নগুলো পুড়লো মোমের মন
উন্মাদনায় থমকে গেল বিদগ্ধ যৌবন
ক্ষুব্ধ বিকেল অস্তাচলে রাখলো পায়ের ছাপ
উৎসবে নয়, উপহারেই বাড়লো মনস্তাপ!
চাঁদের আলোয় বৈষ্ণবী গায় দোহার ধরে ধূণ
পায়ের নিচে ঘাসফুলেরা আচমকা হয় খুন
চক্ষু বুঁজেও সবি দেখি , দেখি শ্মশান ঘাট
কিশোর রাতেই শেষ হয়ে যায় সম্মোহনের পাঠ!
ঘূর্ণায়মান দোলায় দোলে সমান্তরাল পথ
ভগ্নাংশের অণুকণায় চলবে ভবিষ্যৎ
স্বচ্ছ কাচের আয়না দিয়েও যায় না দেখা মুখ
অসংগতির বেদী সাজায় ভন্ড ও হিংসুক!
বুকের ভেতর বৃক্ষছায়া ঠাকুর ঘুমোয় চুপ…
বাসি ফুলের গন্ধে পোড়ে নৈবেদ্যের ধুপ
বুনোঝড়ে পাখি মরে কেউ করে না শোক
বোধের ঘরে জ্বালবে কে আজ কল্যাণের আলোক!
মানব জীবন
ধরো, তোমার ইচ্ছেগুলো যাচ্ছে ভেসে অনেকদূর
ইচ্ছেরা কি দেবারতির খবর শুনে হয় বিধূর?
মান অভিমান কোলাজ করে ওরাও বুঝি কষ্ট পায়?
দেববিলাসী বিষাদ নিয়ে কেউ বা দুখে মুখ লুকায়।
কোথায় থাকে মনদেবতা কোন দেউলে বসত তার
ভুলতিথিতে আসন পেতে কাকে সে দেয় চন্দ্রহার?
এক দেউলে সবার আসন হয় না তো আর সাম্যতায়
আজ্ঞালিপি হাতে নিয়ে কেউ চলে যায় অচিন গাঁয়।
কারো হৃদয় দূর্বিপাকেই গুচ্ছশোকের বাড়ায় ঋণ
আলোকজলে উর্বরা হয় হয়তো কারো মন জমিন
ইচ্ছে যখন মুগ্ধ কথার ভাবনাতে হয় নিবিড় খুব
সেই সুযোগেই আগুনজলে কেউ সুখে দেয় দিব্যি ডুব।
ধূপছায়া দিন দুলকি চালে চলছে ছুটে দ্বন্দ্বাতীত
মানবতার সাজঘরে আর হয় না গাওয়া সুখের গীত
সময় এখন বেশ ঘোলাটে মানবজীবন অসাড় আজ
মননজুড়ে তাই সকলের ইচ্ছেপোড়া বৈরী সাজ
দিন যতো যায় নীরবতায় হচ্ছে কঠিন নিগূঢ় ভাব
জৌলুসী মন গৃহকাতর,, সমন্বয়েও হয় না লাভ।
জীবনের গল্প
মধ্য জীবনের ভাঁজভাঙা ইচ্ছরাই এখন
রাজকীয় আনন্দে বিভোর সারাক্ষণ
বিষাদের ক্যামেরায় তবু জুম করে দেখি
অনাহুত স্বপ্নগুলো,,
কুশিলব দিন তার খবর রাখেনা।
এপিটন রঙে আঁকা কষ্টের ক্ষতচিহ্ন
কখনো হয়ে যায় ছোপ ছোপ রক্ত
ইথারিয় ই-মেইলে বসে কেউ কেউ নিয়ন্ত্রণ করে
দুঃসময়ের রিমোট
বাকহীন তাকিয়ে দেখে নেশাক্রান্ত জুড়িবোর্ড।
অতঃপর , আদর্শবাদী কোন মুদ্রাক্ষরিক
নিয়তির যুক্তফন্টে লেখে
অনুমোদনহীন জীবনের গল্প।!!
দিন চলে যায়-
কালের খাতায় লেখা হয় তার নাম
একদিন
‘সেভিয়র অব দ্য ওয়ার্ল্ড ’-এর মতো
কোটি মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয় তার
মৃত স্বপ্নের এপিসোডগুলো!
থাকে না কিছুই লেখা
সময়ের সাথে সময় মিলেছে ঠিকই
দুঃসহ দিনের পরিধি বোঝেনি কেউ
লোকচিত্রের কফিনে মোড়ানো আবেগ
যুগ মাস ধরে তুলেছে কতো না ঢেউ
মধুমালতির দীপ্তি জড়ানো রাতে
ঝাঁঝালো মেঘেরা কি কথা লুকিয়ে রাখে?
পথ ভুল করা পথিকের কালো চোখে
মেঘলা বিকেল আদরের রেণু মাখে
কে কোথা হারায় কে বা চলে যায় দূরে
পাথুরে জমিনে থাকে না কিছুই লেখা
শপথের পথ আঁকাবাঁকা হোক যত
জানালার পাশে কেউ বসে থাকে একা
নীরবতা নিয়ে যত হোক কানাকানি
অভিসারী দিন আসে তবু ফিরে ফিরে
কাঙালি বালিকা নিবেদন মালা হাতে
দেবতা বিলাসী হয়ে যায় ধীরে ধীরে
অণু-পরমাণু দিনের দেয়ালে যারা
লিখে রেখে যায় পোড়া ইতিহাসগাথা
হয়তো সে সব নীরবে নিভৃতে দেখে
অনুভবে আর ভেজে না চোখের পাতা
পরাধীনতার শেকলে মোড়ানো হাতে
শক্ত কঠিন বিভেদের রেখা এঁকে
সুদূর পিয়াসী কুহক পাখিরা আজো
গভীর নিশীথে ডেকে ওঠে থেকে থেকে।