০১
সময়টা বর্ষাকাল। আর গ্ৰামের কাচারাস্তায় বর্ষাকালে হাঁটার মতো বিব্রতকর বা নাজুক পরিস্থিতি বোধহয় আর কিছু হতে পারে না। গ্ৰামের মেঠোপথ ধরে হাঁটতে চাইলে কাদার সঙ্গে গোপন চুক্তি করেও কোনো ফল হয় না। বরং মহানন্দে কাদাজি তার মাখামাখি ভালোবাসার প্রলেপ এঁকে দেবেনই। এমনই এক বর্ষার দিনে মধুখালী গ্ৰামের কাচারাস্তা দিয়ে কাদামাটি মেখে একাকার হয়ে মামা আনোয়ার মোল্লার বাড়ি যাচ্ছে শফিক।
টুপটাপ বৃষ্টি তখনো পড়ছে যদিও গায়ে খুব একটা লাগছে না এমন। তবে বহুদূর থেকে আসার জন্য শফিকের চোখেমুখে ক্লান্তির ছোপ। তবে রাস্তা যেন শেষই হয় না।
প্রায় বছর চারেক পর শফিক মধুখালী গ্ৰামে পা রাখলো। শেষবার এসেছিল আশ্বিনের শেষভাগে। বেশ কয়েকটা দিন মামাবাড়ি ছিলও বটে। তবে এখন আর আসার জো নেই। শফিক শহরে একটা বেসরকারি কলেজের পিওন। বয়স প্রায় ২৭ তবে দেখলে মনে হবে যেন তার থেকেও বেশি। কেন জানি তাকে একটু বয়স্ক লাগে। নিজে অনেক গবেষণা করেও এর পেছনের রহস্য উদঘাটন করতে ব্যর্থ হয়েছে সে। গায়ের রঙ উজ্জ্বল তবে রোগা চেহারার কারণে শ্যামলাটে দ্যাখায় শফিককে। বাপ মা মরা শফিক তার কর্মস্থলের নিকটেই একটা ভাড়াবাসায় থাকে। বাইরের জগৎ নিয়ে খুব একটা ভাবেও না সে। অবশ্য ভাবার অবকাশই বা কই।
যাই হোক, হঠ্যাৎ সেদিন সন্ধ্যায় মামা আনোয়ার মোল্লার জরুরি ফোন পেয়ে পরদিন কলেজ থেকে তিন দিনের ছুটি নিয়ে সোজা ছুটে যায় মধুখালীতে। পৌঁছাতে যদিও প্রায় সন্ধ্যা ছুঁইছুঁই সময় লেগেছিল। ক্লান্ত শরীর তাই রাতে খাবার খেয়ে বেশ আগেভাগেই বিছানায় এড়িয়ে পড়ে শফিক।
০২
মধুখালীতে শফিকের মামার বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে যেতে কিছুদূর পরে একটা মসজিদ। আরও কিছুদূর যেতে একটা বড় বটতলা যার তলায় গ্রাম্য হাট বসে। পরদিন সকালে মামার সঙ্গে কথা বলার সময় শফিক বুঝতে পারে যে এ জরুরি তলবের আদতে কোনো জরুরাত নেই। বরং ভিন্ন ফন্দি আঁটতেই তাকে ডাকা হয়েছে। শফিকের মা আমেনা বানু মারা যাওয়ার আগে প্রায় বিঘাখানেক আবাদী জমি রেখে গ্যাছেন। যা এতদিন মামা আনোয়ার মোল্লার দখলে ছিল সে জমি। কথার ভাবসাবে শফিক বুঝতে পারে মামা জমিগাছ নিজের ভাবতে শুরু করেছেন এবং তদনুযায়ী জমিটি লিখে নিতে চাই নিজের নামে। যেহেতু ন্যায্য ওয়ারিশ শফিক তাই তাকে ডেকে এনে কৌশলে জমি লিখে নিতে চাই আনোয়ার মোল্লা। তবে শফিকুল ছোটবেলা থেকেই জমি জায়গার উপর মোহ বা আগ্ৰহ কোনটাই খুব বেশি না। সে বিষয় আসয় আঁচ করতে পেরে তৎক্ষানক কোন সিদ্ধান্ত না নিয়ে বরং ভাববার জন্য সময় নিলো। বটতলার হাটে একটা চায়ের দোকানে চা খেতে খেতে শফিক ভাবে তার শৈশবের কথা। ছোটবেলায় মায়ের সঙ্গে কতই না আসতো মধুখালীতে। কত স্মৃতি, কত ঘটনা। এখন সবটা পাল্টে গ্যাছে।
০৩
শফিকের মামা আনোয়ার মোল্লা দুই মেয়ে ও এক ছেলের জনক। বড় মেয়ে রাহিলার বিয়ে হয়েছে বছর চারেক আগে। শেষবার শফিক সেই উদ্দেশ্যেই মধুখালীতে এসেছিল। একমাত্র ছেলে আসাদের গ্ৰামে একটা মাঝারি আকারের মুদি দোকান আছে। সে পুরোদস্তুর ব্যবসায়িক মানুষ। ছোট মেয়ে রাবেয়া শফিকের প্রায় সাত আট বছরের ছোট। সে এখন পাশের গ্ৰামের মাদ্রাসায় একাদশ শ্রেণীতে পড়ে। দেখতে সুশ্রী, গোলগাল চেহারা, সবসময় হাসিখুসি রাবেয়ার সবচেয়ে সুন্দর দিকটি হলো সে ভীষণ লাজুক। আর এই লজ্জা লজ্জা ভাব তাকে বহুগুণে সুন্দরী করে তোলে।
তবুও অভিমান এসে প্ররোচনা দেয় তাকে। বেসামাল হয়ে ওঠে তার মন।
শফিকের মামার ইচ্ছা রাবেয়ার সঙ্গে শফিকের বিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে কোনোমতে কৌশলে জমিটির স্বত্ব নেওয়া। আকারে ইঙ্গিতে সে প্রস্তাব সে দিয়েই ফেলেছে শফিককে। তবে শফিকের হ্যাঁ না কোনোরূপ উত্তর না পেয়ে আনোয়ার মোল্লা মনে মনে চরম হতাশা হয়েছে বৈকি। তবুও সে আশা ছাড়েনি। পরদিন সকালের খাবার খাচ্ছে শফিক। তখন তার মামি এসে সরাসরি তার মামার প্রস্তাবটা পেশ করলো। শফিক তখনো নিশ্চুপ।
০৪
সেবার তিন দিনের ছুটি নিয়ে আসলেও তিনদিনে তার ফিরে যাওয়া সম্ভব হয়নি। পাকা আটদিনের অষ্টবিভ্রম সেরে জীবনের দেয়ালে নতুন একটা চিত্রকর্ম ধারণ করে তবেই তাকে ফিরতে হয়েছিল। সোজা কথায় অনেকটা তড়িঘড়ি করে শফিকের সামান্য অনিচ্ছা সত্ত্বেও মামা মামীর জোরাজুরিতে এবং সবকিছু পরিষ্কার ঠাওর করে ওঠার আগেই মোটামুটি ঘটা করেই গ্রাম্য পরিবেশে ধরা বিয়ের মতো অনাড়ম্বরের সঙ্গে রাবেয়ার সঙ্গে শফিকের বিয়ে হয়ে গ্যালো। হয়ে গ্যালো ঠিক না বরং দিয়ে দেওয়া হলো। শফিক যে একেবারে অখুশি তা অবশ্য নয়। রাবেয়াকে অপছন্দ করতে পারাটা নিতান্ত সাহসের। কিন্তু শফিক ঠিক অতটাও সাহসী নয়। সুতরাং ভালো লাগা না লাগার সন্ধিক্ষণের মধ্যেই স্বামী স্ত্রী হয়ে উঠলো শফিক আর রাবেয়া। রাবেয়া মিষ্টি মেয়ে। তাকে উপেক্ষা করার মতো ধৃষ্টতা শফিকের নেই। তাই রাবেয়াকে উত্তম সঙ্গিনী ভাবতে তার বেশি বেগ পেতে হয়নি।
যাহোক, এতকাল যেটা ছিল মামাবাড়ি সেটাকে শ্বশুর বাড়ি রূপে রেখে রাবেয়াকে নিয়ে অবশেষে শহরের উদ্দেশে রওনা হলো শফিক। পরদিন কলেজে গিয়ে পুরো ঘটনার বিবরণ উপস্থাপন করে ঝাড়ির বদলে সবাই শফিককে সাদরে গ্ৰহণ করলো। অনেকে তো সস্তা রকমের মশকরা করতেও ছাড়লো না। শফিক কিছুটা অবাক হলেও স্বাভাবিকভাবেই নিলো সব।
০৫
রাবেয়া শফিকের ছোট সংসার বেশ চলছিল। সুখের আনাগোনা যেন সদা লেগেই থাকে তাদের সংসারে। রাবেয়াও অল্প ক’দিনে একেবারে পুরোদস্তুর গৃহিণী হয়ে উঠেছে। স্বামী শফিকের সঙ্গে চমৎকার বনিবনা হয়েছে তারও। মাঝে মাঝে তারা এখানে ওখানে ঘুরতে বের হয়। সিনেমাও দেখতে যায় মাঝে মধ্যে। আর ছোটবেলা থেকেই রাবেয়ার ঘোরাঘুরির বড্ড হাউস। খুব পছন্দ করে ঘুরে বেড়াতে। স্বামী শফিকও স্ত্রীর এই ইচ্ছেটাকে বেশ গুরুত্ব দেয়। প্রায়ই শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে যায় দুজনে। এভাবেই সুখের জোয়ারে ভাসতে ভাসতে কেটে যেতে থাকে তাদের দিন। দিনের পর দিন যোগ হতে হতে কেটে যায় প্রায় দেড় থেকে দুই বছর। এরমধ্যে শফিকের ছোটখাটো প্রমোশন হয়েছে। সে এখন অধ্যক্ষের অফিসের পিওন। বেতনও বেড়েছে। আর কলেজে টুকটাক প্রভাবও তৈরি হয়েছে তার। সুখের এ ফোয়ারার প্রতিটা কণাকে শফিক উপভোগ করে। তবে পরক্ষণেই চিন্তার রেখা ভিড় করে তার মনে। কপালে ভাঁজ পড়ে। ভাবতে থাকে ভবিষ্যৎ নিয়ে। সুখে থাকতে থাকতে হঠাৎ কোনো বিপদের সম্মুখীন হতে হয় কি না, এসব অনাবশ্যক চিন্তাই তাকে খুব ভাবায়। তবে হ্যাঁ, মাঝেমধ্যে একটু আধটু ঝামেলা বা ঝগড়া এসব হয় না, তা নয়। হয় বটে তবে তার মেয়াদকাল টেকে না বেশিক্ষণ। তবে ভালো দিনের গভীরে গভীর কোনো কালো বা বিষাদের সংকেত আছে কি না, এই ভাবনায় ইদানীং বেশ মশগুল থাকে শফিক। কী জানি এই বুঝি গোছালো সব আয়োজন এলোমেলো হয়ে যায়।
০৬
সেদিন সন্ধ্যায় শফিক দেরি করে বাসায় ফেরে। ফিরতে আজকাল প্রায়ই দেরি হচ্ছে তার। কলেজে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শনে আসবেন। তাই পুরো কলেজকে নতুন রূপ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আর বেশ কিছু কাজের তদারকি করতে হচ্ছে শফিককে। ফলে কলেজে ইদানিং একটু বেশিই সময় দিতে হচ্ছে তাকে।
বাসায় রান্নাঘরের গ্যাসের লাইনে সমস্যা হচ্ছে। লিকের-টিকেজ হয়েছে বোধহয়। কোনোরকম টেপ, আঠা দিয়ে গোঁজামিল দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। সেটা দ্রুত ঠিক করা দরকার তবুও আজ কাল করবো করবো করেও ঠিক করা হচ্ছে না ব্যস্ততার হেতু অথবা অলসতার কারণে। কলেজ থেকে বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে আয়েশ করে দুটো খেয়ে খাটে শুয়ে টিভি দেখতে বসে শফিক। আর ভালো করে ঠিক করা হয় না সেটা।
যাই হোক, রাবেয়া অনেকদিন ধরেই বলছে বাপের বাড়ি মধুখালী যাবে। তবে শফিকের কলেজের কাজের চাপের কারণে যেতে পারছে না তারা। রাবেয়ার অভিমান বাড়তে থাকে। আর তেমন কোনো সঙ্গী বা কথা বলার মানুষ না থাকায় তার গোপন এ আক্ষেপ বা আবেদনের কথা কাউকে বলতে না পারায় কথা মনের মধ্যে জমে গ্যাছে। যার রেশ পড়তে শুরু করেছে সংসারে। কেমন যেন মনমরা হয়ে যাচ্ছে রাবেয়া। শফিক বিষয়টা বুঝতে পারে। সান্ত্বনা দিয়ে বিভিন্ন কথা বলে। কলেজের ব্যস্ততা কমলে বেশ কয়েকদিনের জন্য তাকে নিয়ে মধুখালী থেকে বেরিয়ে আসবে এসব কথা বলে। তবুও খুব একটা লাভ হয় না। সব স্বাভাবিক তবু কিসের যেন একটা অদৃশ্য দূরত্ব বা বেসুরো ভাব এসে পড়ে। রাবেয়া সহ্য করে। বুকে পাশান বাঁধে। তবুও অভিমান এসে প্ররোচনা দেয় তাকে। বেসামাল হয়ে ওঠে তার মন।
০৭
আগামীকাল শফিকের কলেজে পরিদর্শনে আসবে বোর্ডের কর্মকর্তারা। শফিক খুব সকালে কোনোরকম মুখে কিছু একটা পুরে ছুটে যায় কলেজে। আজ তার কত কাজ! কত ব্যস্ততা। রাবেয়াকে ঠিকমতো সবটা বলে আসবে সে ফুরসতও পায়নি শফিক। ফিরতে যে দেরি হতে পারে সেটাও বলতে ভুলে গ্যাছে।
শফিকের হাতে মধুখালীর টিকিট। রাবেয়াকে চমকে দিতে চেয়ে শফিক নিজেই চমকে যায়। পাল্টে যায় সুখের সংজ্ঞা।
এদিকে রাবেয়ার অভিমান কিছুটা কমেছে। আর তো দুই-একটা দিন। তারপরেই তো ফ্রি হবে শফিক। মধুখালী যাবে তারা। অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে সে। উত্তেজনা কাজ করে তার মধ্যে। সে গ্রামে যেতে চাই। বাবা আনোয়ার মোল্লা বেশ অসুস্থ। বাড়ি থেকে অনেকদিন ধরে ফোন করে আসতে বলছে। মন টিকছে না রাবেয়ার। কোনো কাজেও মন বসতে চাইছে না। এসব নিয়েই সারাক্ষণ ভাবতে থাকে সে। ভাবতে ভাবতে একসময় খেয়াল করে বেলা হয়ে গ্যাছে বেশ। দুপুরের রান্না চড়াতে হবে। শফিক ফিরে এসে ভাত না পেলে রেগে যেতে পারে। তার নিজেরও খিদে পেয়েছে। এসব ভাবতে ভাবতে দ্রুত সে রান্নাঘরে রান্না চাপাতে যাই। বেশি দেরি করা চলবে না।
০৮
শফিকের জন্য আজ ছোটমাছ চচ্চড়ি আর গরুর মাংস রান্না করবে বলে ভেবে রেখেছে রাবেয়া। ঝাল ঝাল হালকা ঝোলের গরুর মাংস শফিকের ভীষণ পছন্দের। আর মাছ চচ্চড়িও। ফ্রিজ থেকে ছোটমাছ, মাংস বের করে ভালোমতো কুটে বেছে, ধুয়ে এবার রান্নাঘরে যায় সে। পছন্দের তরকারি দেখে শফিকের উচ্ছাসের দৃশ্য মনে মনে কল্পনা করে রাবেয়া। মন খুশিতে ভরে ওঠে। এদিকে তার অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে। খুব শীঘ্রই হয়তো মধুখালীতে যাবে তারা। এক অদ্ভুত আনন্দ অনুভব করে রাবেয়া।
এদিকে শফিকের কলেজে পরিদর্শক দল চলে এসেছে। খুব ব্যস্ত সময় পার করছে সে। বেশ ছুটাছুটি করতে হচ্ছে তাকে। কলেজ অধ্যক্ষ কর্মকর্তাদের সামনে শফিকের কাজের বেশ প্রশংসা করলেন। শফিক মনে মনে বেজায় খুশি। এমন সময় শফিকের ফোনে কল এলো। তাদের পাশের বাসার শরিফা ভাবির কল। মুহুর্তেই স্তম্ভিত হয়ে উঠলো শফিক। বাকরুদ্ধ হয়ে গ্যালো যেন। উদ্ধশ্বাসে ছুটে গ্যালো বাসার দিকে। গিয়ে যে দৃশ্য দেখলো তার জন্য কখনোই সে প্রস্তুত ছিল না।
তড়িঘড়ি করে রান্না বসাতে গিয়ে গ্যাসের লাইন চালু করতে গিয়ে রাবেয়ার লাইটার থেকে আগুন বের হতেই লিক হওয়া গ্যাস লাইনের গ্যাসে আগুন লেগে যায়। মুহুর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারিদিক। রাবেয়ার শাড়িতে আগুন লেগে যায়। সে আগুন নিভানোর জন্য পানির সন্ধানে ছোটে রাবেয়া। ছুটাছুটির কারণে আগুন আরো ধরে ওঠে। ঝলসে যায় রাবেয়ার শরীর। রাবেয়ার চিৎকার শুনে শফিককে খবর দিয়ে রাবেয়াকে উদ্ধার করতে ছুটে আসে আশেপাশের প্রতিবেশীরা। তবে ততক্ষণে রাবেয়ার শরীর ঝলসে দ্যায় সর্বনাশা আগুনে।
ভয়ানক দ্যাখায় তাকে। শফিক সে দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। হাহাকার করে ওঠে বুক। ভীষন কাঁদতে চাইছে মন তবু পাথর হয়ে গ্যাছে যেন সে। কাঁদতে পারে না। অপলক দৃষ্টিতে বিদ্ধস্ত রাবেয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে সে। তার চোখের সামনে পড়ে থাকে ঝলসে যাওয়া রাবেয়া। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে মূর্তির মতো পড়ে থাকে শফিক। অবশেষে তার অবসর মিলেছে। তবে যার জন্য এ অবসরের আয়োজন সে সদ্য রোস্ট করে আনা মুরগির মতো বিকৃত শরীরে শুয়ে আছে। অথচ আজ বাদে কাল তাদের মধুখালী যাওয়ার কথা। শফিকের হাতে মধুখালীর টিকিট। রাবেয়াকে চমকে দিতে চেয়ে শফিক নিজেই চমকে যায়। পাল্টে যায় সুখের সংজ্ঞা।