আজ মাটি তার জল ছুঁয়েছে
আজ মাটি তার জল ছুঁয়েছে
আজ সত্যব্রত শিরীষে মাথা
রেখে ঘাসে দু-পা ভিজিয়েছে
সে অনেক শিশির স্নিগ্ধ আর্দ্র
গল্পকথা এখানে এসে মিশেছে
আজ মাটি তার জল ছুঁয়েছে
খুব ভোরে যারা ফুল কুড়িয়েছে
নগ্নতায় ঢের উল্লাসে মেতেছে
আজ সন্ধ্যাকাশে শকুন এসেছে
পল্লবে ধূসরতা কাণ্ডে শুষ্কতা শুধু
রাতের আঁধারে কারা যেন ঘুরছে
পাখিরা উড়ছে মানুষেরা ধুঁকছে
আজ মাটি তার জল ছুঁয়েছে
বিরল উপসর্গ তবু শেকড়ের গান
বেজে উঠছে তানপুরাটা হাসছে
সমস্ত কান্না সংগীতে সেজেছে
লু-হাওয়া তখনই বাঁধন খুলেছে
পলি ও পল্লিরা সুনসান, কোলাহল
কিছু ভেসে আসছে দূরের স্রোতে
আজ মাটি তার জল ছুঁয়েছে
ধরমদারি
তুমি চাঁদে যাও সূর্যে যাও
বুধে কিংবা মঙ্গলেও
আমি ঢেঁকিতে তুলি ঢেঁকুর
থাকি বোর্কার জঙ্গলেও
সন্ধ্যা হয় মাগরিবে
আমার আহ্নিকে ঘোরে
তাবিজের ফুঁৎকার কিছু
ঝাড়ফুঁক আর তুকতাক
ধর্ম আমার এতই ঠুনকো
বাতাসেই ভেঙে চুরমার
দুনিয়াদারি মুমিনের নয়
আখেরাতের রাতের জন্য
সাজি মোরা মালাকুল মৌত
জান কবজিবেন সেই
ফিকিরে করি গুজরান
বেহেশতে হুরে গেলমান
আক্কেল বড় না ওহি বড়
সেই বাহাসে দিনটি যায়
জিন্দেগি ভর মাগফেরাত
মাগো সাফ রবে দিলটায়।
নিম্নবর্গের দিনলিপি
নিম্নবর্গের মানুষ দিন আনে দিন খায়
স্বচ্ছলতা বলতে ওই হররোজ কর্মের
গ্যারান্টি লুঙ্গি ও গামছার আড়াআড়ি
মুখে পান ও বিড়ির হাসি কপালে ভাঁজ
বয়েসি দেমাগ নেই শুধু খেটে যাওয়া
অহল্যা নিয়মে ঘরে চাল ও কুমড়োর
বায়না সাতসকালে নিড়ানির তাগাদা
একটু ফুরসত নেই আসমানের দিকে
তাকাবার; পায়ে পায়ে হেঁটে চলা খেত
থেকে খেতে জমির আবাদে মৌসুম
ধরতে হলে ঘামের সমুদ্রে ভাসাতে
গতরের জিরান নেই একরত্তি সংসারে
রাতের আকাশে খোয়াবের তারা গুনে
দিনের রইদ ঠেলে নিয়ে যায় কামের
ময়দানে এফোঁড়-ওফোঁড় পিঠ-হাত-পা
আঙুল ফুলে একাকার যেনবা ফোস্কা
আঁচিল আলি যখন তার বেদনার কথা
জানায় বৃষ্টিতে ধুয়ে যায় মাঠঘাটশস্য
এত বেদনার মাঝেও হাসি ঝরে বউ ঘরে
এতক্ষণে বসেছে চাল ও কুমড়োটা ভেজে।