তোমার প্রস্থান
সারা দিন বৃষ্টি পড়ার শব্দ দেখি
তোমার প্রস্থানের মতো
স্যাঁতস্যাঁতে রাতে।
ধোঁয়ায় মগ্ন বিষণ্ণ আঙুল
জপমালার খোঁজে
সক্রিয় হয়।
আমাদের, অথবা মানুষের কাছে
আর কোনো বার্তা অবশিষ্ট নেই
মুখস্থ বিদ্যা ছাড়া আর কোনো জ্ঞান নেই
যা তোমাকে দিতে পারি এই বিদায় বেলায়
যা তোমাকে মুখর করবে
বৃষ্টির রহস্য উদঘাটনে
তা হারিয়ে গিয়েছে
অথবা খুঁজে পাচ্ছি না আর।
মানুষ চিরকাল স্রোতের মতো
যাযাবর;
আকাশ থেকে দুঃখ নামে
তাই প্রেম, মনে হয়, স্বর্গীয় উষ্ণ;
হায়!
তোমার প্রস্থান বৃষ্টির মতো সুন্দর
তোমার প্রস্থান দুঃখের মতো প্রবল
রাত্রি
আমার নিঃসঙ্গ লাগে
রাত্রি রাত্রি লাগে—
গভীর থেকে গভীরে আলো সরে যায়
এমনই নিঃসঙ্গ লাগে;
আবার নামছে শীত
আবারও কুয়াশা পৃথক করবে
ঋতু থেকে ঋতু—
অনিচ্ছায় হাঁটছি
বায়ান্ন বাজার তেপ্পান্ন গলির শহরে
আকাশজুড়ে কুকুরের টহল
দেহ থেকে দেহে ওড়ে
বাষ্পের সংকেত—পৌরাণিক আলো এসে পড়ে রাস্তায়
নিবিড় হয়েছ প্রিয় পুরুষের প্রকোষ্ঠে
সন্ধ্যা থেকে এ আগুন
জাগিয়ে তুলেছ প্রেমে, ইতিহাসে, লজ্জায়
বর্ণমালা
শুনতে চাই তোমার কথা। বহুদূর থেকে ভেসে আসা
অশ্বত্থ পাতায় কণ্ঠ রেখে যাও—
বৃষ্টি পড়ার মতো উচ্চারণগুলো বনাঞ্চলে ঘুরে বেড়াবে;
তোমার এবং আমার নিদ্রায় হাওয়া এসে উড়বে,
ঘূর্ণিবাতাসে সেই ঘুম আরও গাঢ় হবে।
পর্বত চূড়ায় মেঘ হয়ে যাবে তোমার কথামালা…
সেইসব শোনার অপেক্ষায় থাকব। তোমার কাছে ফিরে যাবো,
বারবার ফিরে যাবো, সমস্ত প্রত্যাখ্যান উপেক্ষা করে।
রক্তের ঘ্রাণ শুনতে কি পাও?
সবুজ আলস্যে ভরা দিনগুলো ডাকছে। সংগীতে সংগীতে পূর্ণ করো দুপুর,
তারপর যাওয়া যাবে আকাশমনির তলে।
একদিন মানুষ মানুষের কাছে ফিরে যাবে
যুদ্ধ থেমে যাবে
নদীতে স্রোত আরও তীব্র হবে।
সেই স্রোত ও উত্থানে উৎকীর্ণ বর্ণমালা ভেঙে পড়বে