চতুরঙ্গ
০১.
ওপারের খুনসুটি মেঘনায় ঢল
ছলাৎ ছলাৎ বাজে অশান্ত জল
তুমি এসো দিলে ছুঁয়ে বৃষ্টির পণ
প্রেমের মূরতি নাকি হয় এমন!
আষাঢস্য আকাশে গুড়ুগুড়ু ডাক
মেঘের ডানায় তখন বিজলির চমক
ইলিশের নৌকায় আনন্দবাতিখেলা
তুমি এসে বললে, হৃদয়ে বসেছে মেলা!
ইলিশবাড়িতে গেলাম যেই দিন
রক্তিম সূর্যের বেড়ে গেলো ঋণ
মুখে মুখে লালিমার অরূপ দাগ
আমায় নিয়ে করলে কত শ্রাগ!
সময়ের করুণায় পেয়েছি যে আলো
আমি-তুমি একাকার নতুন দ্বীপ জ্বালো।
0২.
আচ্ছা,এতোবার ফোন করি
থাকো কোথায়,বলতো?
ম্যাসেঞ্জারে আমার ম্যাসেন যে সিন করো না তা বুঝি
তবুও কেন যে নক করি!
কেন বাতাসে ভেসে বেড়ানো শব্দগুলো কানে বাজে
বলেছিলে, ‘মেঠোপথ’ ধরে,
মটরলতা আয়ার কালাইয়ের মাঠ পেরিয়ে, নিয়ে যাবে স্বপ্নপুরে
সেই কখন থেকে লালশাড়ি,হাত ভর্তি রেশমি চুড়ি পরে অপেক্ষা করছি-
আম্মা বার বার জানতে চাচ্ছেন,কেন চেইঞ্জ করছি না-
কেমন করে আম্মাকে বলবো, তুমি আসবে, আজ দোল পূর্ণিমার দিন!
তুমি বলেছিলে, মেহেদি পরা হাত ধরে, চোখ চোখ রেখে
নাকের খুব কাছে এসে,কানে কানে কী যেন বলবে-
সে কথা শোনার লোভে কানে পরিনি গয়না,
নাকে পরেছি হীরার নাকফুল,হাত রাঙিয়েছি কড়ারঙ মেহেদীতে!
কারো পায়ের শব্দ শুনলে চমকে উঠি-
বৃষ্টির চাদর গায়ে এ বুঝি তুমি এলে!
এই বুঝি বিনুনী খুলে দীঘল চুলে মুখ লুকিয়ে চমকে দেবে!
অপেক্ষার মধুরতম মুহূর্তগুলো ধীরে ধীরে বেদনায় ঢেকে গেলো!
আচ্ছা আর কখন তোমার সময় হবে?
বেলা যে পড়ে এলো!
0৩.
নিজেকে উপুড় করে দিলে ঢেলে
উষ্ণবিলাসিতায় ধরলে মেলে
সব গেলো চলে
কিঞ্চিৎ দেয়ার ছলে
অবশেষে বুঝলে সবাই শুধুই খেলে!
খেলার মাঠ শূন্য নেই খেলোয়াড়
একসাথে তুমি রেফারি ও প্লেয়ার
জেতার বদলে
স্বার্থের কবলে
হয়েছি ঘরশূন্য জীবনকর্মকার!