এই ঈদে
এই ঈদে একা একা বাড়ি ফিরছি আর
ভাবছি—ওখানে কি আছে আমার—কেন যাচ্ছি?
অন্তর্হিত ফেলে আসা সম্পর্কের অবকাঠামো?
সোনামাটিতে গুপ্ত নাভীমূল…
আর চোখের নুনে ছুটে চলা এক মায়ানদী?
মা-বাবা দুজনেই শুয়ে আছেন মাটির সুঘ্রাণে
দেঁউড়ি বেড়ায় অপেক্ষা-কাতর মুখ নেই কোনো!
অভিবাসী সন্তানেরা প্রবাসের প্রত্নরত্নে বিহবল
আমি বসে আছি নিঃস্ব—দারিদ্র্যসীমার নিচের জনতা!
অথচ যখন ছিলে তুমি আমারই হাতের ছোঁয়ায়
মনে হতো কত কিছু আছে আমার
কোল আলো করা দেবলোকের দুই শিশু
বুকে সাপটে ধরা মা-বাবা-ভাই-বন্ধু
জাংলা ভরা লকলকে শাক-সবজি
গোয়ালে জাবরকাটা দুধেল দুটো গাই
জমিন জুড়ে বাতাসে ঢেউ তোলা আশা
নতুন আউশ-আমনের ফেনাভাত
পাতের কিনারে সরবাটা সামান্য একচামচ ঘি
ঈদের সকালে খিচুরী ও দুধ সেমাই…
পৃথিবীর সবচে ধনবান প্রভাবশালী
মানুষ হয়তো আমি
কী নেই আমার?
আষাঢ়ের মন-পোষা গল্প
তোমার ওখানে রটে বৃষ্টির খবর
মোবাইলেও ঝরে তার ঝমাঝম শব্দ
আমাদের এখানে শুকনো নদী
আকাশের দিকে অপলক—
আজই তো পয়লা আষাঢ় ছিল
মনে পড়িয়ে দিলে তুমি…
আমি তো ভুলি থাকি এসব মন-পোষা গল্প!
তবু বিরহী যক্ষ এসেও হানা দেয় স্মৃতি-বাদলে
কালিদাসের হাতে উদাস মেঘদূত নড়েচড়ে ওঠে!
আমার উঠোনের কেয়া-কদমফুলগুলো
ভরা বর্ষার আগেই ছিঁড়ে নিয়ে গেলো!
অন্য কেউ!
বাতাসের গান-কথা
এতটা আলগা করে দিলে?
পারলেও!
এভাবে নিজের করে নিতে সব…
একটা ফোন-কলের নেশা এভাবে কেটে দিলে?
শুনেছি ওখানে রিংটোন বাজে না।
আন্দোলিত হতে হতে আমার বুকেই
তোমার কবর মিশে গেলো বাতাসের গান-কথায়!