এলোমেলো কয়েকটি লাইন
০১.
শ্রবণাকে মনে পড়ে। আমাদের শ্রবণা
কি জানে আমার পরাজয়? মুখে কিছুই
বলতে হয়নি, তবুও বিকেলের ট্রেনে,
আমাদের ভিজিয়ে দিয়ে-নিতান্ত অন্ধকারে
রেখে, আমাদের গায়ে তপ্ত দীর্ঘশ্বাস ঢেলে
ব্যস্ত মানুষেরা যেমন বিচ্ছিরি রকম
হোঁচট খেয়ে ও না খেয়েও পথকে গালাগালি
করতে করতে হারিয়ে যায় ভীড়ে-শ্রবণাও কি
তেমন হুটোপুটি খেয়ে-গল্পে আমাদের
বিষাদকে ঢেকে নিস্তব্ধ হয়েছিল?
তুমি তো চেয়েছিলে তোমার স্তন ওকে দিক
নিয়তি। চোখে কাজল এঁকে-আমার বুকে
ঘুমাবে দুর্মূল্যের দুপুরের ঘুমটি। তুলতুলে
দুটো হাত-ধোয়া তুলসির মত আমাদের
জড়াবে অসম্ভব প্রার্থনায়।
এত কিছু ঘটে গেল, নিয়মের মত-শ্রবণা
তোকে দেখেছিলাম-ঘুরেফিরে-তোমার আগুনে।
০২.
তোমাকে ডেকে নিয়ে গেলো মৃত্যু।
তখন কী গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ নাকি হেমন্ত?
এমন ধরে আসতে থাকে গলা, এমন
দম আটকে আটকে যেতে থাকে, গুলিয়ে
যেতে থাকে ঋতুর হিসাব।
খা খা রোদের
ভেতরে ঝকঝকে রোদেলা আকাশেও ঝাপসা
হয়ে আসতে থাকে চোখ। পাঁজরের হাড়গুলো
যেন বেঁধে রেখেছে জানালার গ্রিলে-দূরের আকাশে-
কেউ তোমাকে নিয়ে যাচ্ছে, এই সংসার, পুত্র-কন্যা-
পৃথুর মায়া-সব গুলিয়ে যেতে থাকে-নির্ভার হয়ে
পড়তে থাকে সকল আয়োজন-একটি জটিল ধাঁধা
তবুও বৃত্তাকারে দৃশ্যের পর দৃশ্য সাজাতে থাকে।
এ কি মায়া? ওৎ পেতে থাকে নিরবতা-চোখ ভিজে যায়।
০৩.
এই যে প্রতিদিন মরে যাচ্ছি, তা-কি টের পাচ্ছো?
এই যে হাসছি, এই যে আঙুলে আঙুল রেখে হাঁটতে চাইছি,
এই যে দেয়ালে স্থির হয়ে আছে দিনপঞ্জি
তাতে কি সময় থমকে দাঁড়ালো?
চার বেহারা কাঁধে তুলে নিলেই মন হারিয়ে যায়?
যে ঘোরে, সে কি জন্মরোহিত? ফিরে আসবে?
বিশ্বাসই তো মিলিয়ে দেয় বস্তু, তর্ক নিয়ে যায় দূরে,
বহুদূরে, মিলিয়ে যাবার পরও।