আত্মগ্লানি
ঝরে যাওয়া ফুল
অ ঝরে যাওয়া ফুল, দেবতার পদতলে হয়নি তোমার স্থান?
তবে কি মন খারাপ? অজস্র বেদনা পুষে মন করেছো ম্লান?
এই দেখো, আমি জন্মান্তর থেকে ঝরে আছি ,
একদিন আকাশ ছোঁবো অথোচ এখনো শিশিরের ঠোঁটে লুটোপুটি খাই রোজ,
বেদনার গান বাজতে দেইনি প্রাণে।
তুমি এখনো বুঝোনি, বুঝোনি তার মানে।
যেখানে খুঁজে পাই স্রোত
একদিন তোমাকে এত ভালবাসবো,
পথ খুঁজে পাবে না পালাবার।
‘ভালোবাসবো’ শুধু এই দাবিতে,
তুমি মিশে হবে একাকার।
ভালোবাসা, অহো…প্রেম
এই বিহনে চলে কি বিশ্বসংসার (?)
তাই জানিয়ে দিতে অথবা একটি ফুলের আন্দোলনে,
ঝাঁপিয়ে পড়ো, নির্দ্বিধায় ভালোবাসার।
কত অকারণ কিংবা ধানের ক্ষেতে দোয়েল পাখির শিস,
মিশে যায় প্রেমের বাতাসে, পদ্ম পুকুরের জল।
টিয়ে শালিক মাছরাঙ্গা অথবা কোনো করপোরেট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান
তোমার প্রেমের দামে কেনা আলোক রশ্মি টলমল।
কত প্রেম জমা হয়,
হেমন্ত শীত কিংবা কোকিলের কণ্ঠে, অথবা শিরিষতলে।
ছায়া মাখা সবুজ বনগিরি
গ্রামের হারিয়ে যাওয়া মেঠোপথ সেই কথা বলে।
সত্য অসত্যের মাঝে লোফ করি সীমা
প্রেমিকার মতো ঠোঁট, পৃথিবীর ওষ্ঠে চলে ষড়যন্ত্র,
আমাদের কবিতারা কথা কয় না,
ভালোবাসার আয়না সবুজ ঘাসে সূর্যের মতো নরম পায়ে হাঁটে
দুর্বাদল কার্তিক মাসের গহীন রাতে গণতন্ত্র ছুঁয়ে নিমজ্জিত হয় মদের গ্লাসে।
তারপর অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে জলপরীর মতো আসে নির্বাচন।
আমার কথা তোমার কথা কারো থাকে না মনে,
কেউ কেউ গোপনে, আবার কেউ সংগোপনে
কেউ চলে ঢেউয়ে ঢেউয়ে
আমাদের সবুজ বাটন অট্টালিকার পাশে
কোনো রকমে বেঁচে থাকার আশা নিয়ে পৃথিবীর এই মহাসমুদ্র পাড়ি দেয়।
তারপর একদিন ঈশ্বরের দরজায় কড়া নাড়ে।
আমাদের আগে ঈশ্বরের কানে ভুল সব মন্ত্র দিয়ে যায় সমাজপতিরা,
ঈশ্বর নির্ঘাত পক্ষপাতদুষ্ট না হলে আমাদের সেখানেও
নির্মল বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই।
আমাদের অধিকারের কাঁটাতার মোড়ানো।
বছরের-পর-বছর সহস্র বছর শতাব্দীর কোণে লেখা থাকে আমাদের না পাওয়ার দুঃখ,
আমাদের ভোটে কেউ নির্বাচিত হয় না,
আমাদের ভোট আমাদের জোট অনেকটা নিঃস্ব পড়ে রয় ভালোবাসার পরিত্যক্ত ডাকবক্সে।
আমাদের প্রেমিকাদের ঠোঁট বিষাক্ত করে তুলেছে অসুরের দল,
আমাদের প্রেমিকারা নির্জীব দুর্বল,
আমাদের বাহুবল ডাস্টবিনের ছেঁড়া তেনা,
যেখানে অর্থ নিমিত্ত তৈরি করে সেখানে আমাদের মাথাগোঁজার ঠাঁই আছে
এইটুকু ভেবে পাঁচ ডজন বছর পার করে দেওয়া যায়।
অষ্টাদশী কবিতা
প্রেমে পড়লে ছেলেরা বুকের ওপর পৃথিবী সমমানের একটা অথর্ব পাথর নিয়ে ঘুরে,
আর প্রেমে পড়লে মেয়েদের মন ছলাৎ-ছলাৎ করে।
প্রেমে পড়লে ছেলেরা যেকোনো দুঃসাধ্যে অভিযান চালাতে পারে নির্দ্বিধায়,
আর প্রেমে পড়লে মেয়েরা লুকোচুরি খেলে অন্তরায়।
প্রেমে পড়লে ছেলেদের মন হয় আকাশ সমান,
মেয়েরা পাখপাখালি-গাছগাছালি, কবিতায় মুখ ডোবান।
প্রেমে পড়লে ছেলেরা বাউন্ডুলে ভাব ছেড়ে গৃহস্থ হওয়ার আশায় নেশা পালে দিনরাত,
মেয়েরা অগত্যা জঞ্জালে প্রিয় সময়গুলোকে করে অনর্থ বরবাদ।
প্রেম হলো নেশা, ছেলেদের চোখে-মুখে-বুকে সুপ্ত আগ্নেয়গিরির লাভা,
মেয়েরা অস্বীকার করে দারুণ! ওই ছেলেটা কে? আমি চিনি না বাবা।
প্রেমে পড়লে ছেলেরা জিভ্ কাটে, অসহ্য কোলাহল আর ত্রিমুখী যন্ত্রণায় ছটফট করে গলাকাটা মুরগির মতোন,
কী আশ্চর্য মাইরি! মেয়েরা সবকিছু লুকাতে পারে, প্রেমে পড়ে মিথ্যা বলা ওদের কাছে ঐশ্বরিক বচন।
না না বলবো না আর, সদা সত্য বলা পাপ। ঢের বলেছি হয়তো
যদি প্রেমিকা থাকে মোর- চামড়া তুলে নিবে, ইয়ে ধরে ঝুলিয়ে রাখবে নয়তো।
দেহের পঞ্চবট
ফুল ছেঁড়া হয়ে গেলে পাখিদের ঘুম ভেঙে যায়-
অরণ্য বিদায়।
লতা পাতা সংগম শেষে আমেজ রাখেনা আর-
সূর্য উদয়।
লোকালয় জেগে উঠে করুণ বালুচরের আর্তনাদে-
শুনি মানুষের মুখে কলরব।
শালিক দোয়েল কিংবা টিকটিকির ঠোঁটে লাগে, রৌদ্রাক্ত যানজট।
পুনরায় আবেশ জমে
দেহ থুয়ে দেহে উঠে পঞ্চবট।