আমার জীবনের সব কিছুই এখন ধুলোবালি
নিঃসঙ্গতা ছাড়া বলো আর আমার আছে কী?
ঝলমলে রোদে ইচ্ছে হয়
দূরের মানুষকে ছুঁয়ে দেখি:
দূর আরো দূর হয়ে যায়
গভীর কুয়াশা তবু রোদের জলসা সাজায়।
আমার জীবনের সব কিছুই এখন ধুলোবালি
মুছতে পারি না কিছুতেই হাতের কালি
আমি পাইনি তোমার গোপন সুড়ঙ্গের সন্ধান
থেমে গেছে আমার জীবনের কতো হাসি কতো গান।
সবুজ পাতা না থাকলে সজীবতাও নেই শীতে
তাই সজীবতার বড্ড অভাব লেগে আছেই
হৃদয়ের মন্দিরে বাজে না আর ঘন্টাধ্বনি
বাগান জুড়ে রঙিন ফুলেও ভর করেছে শনি।
শূন্য ঝুলছে জানি ভালোবাসার ঘরবাড়ি
শৈত্য প্রবাহে যদিও বাড়ি ফিরি সাত তাড়াতাড়ি
প্রতি মুহুর্তে বাঁকা রামধনুর রঙ হয় মধুর
লবণ ও রক্তের ফারাক তবু দূর থেকে সুদূর।
চোখের পাতায় গুচ্ছ গুচ্ছ কবিতা
অন্য কোনোদিন তোমার চোখের পাতায়
কবিতা লিখবো গুচ্ছ গুচ্ছ চিত্রকল্পে
দ্রুততম সময়ে তোমার চোখের পাতায়
শব্দের পদ্ম ফোটানো কিছুতেই সম্ভব নয়।
আজকের শব্দ আগামী দিনের পরিচালক হলে
ভালো হতো,
স্বপ্ন ও বাস্তবের মেলবন্ধন কিছুতেই হচ্ছে না যে।
তা না হোক স্বপ্ন নিয়ে না হয়
কিছুক্ষণ লুকোচুরি খেলা যাক
বাস্তবের সবকিছু না হয় বাদ যাক:
তবুও তোমার চোখের পাতায় প্রেম থাক।
চোখের জিপার খুলে যাক
তুমি তোমার দু’পা মাটিতে নামিয়ে বসে থাক,
ইচ্ছে হলে খোলা ম্যানহোলের দিকে তাকিয়ে থাকো
মনটা ভালো হলে একবার চোখ খুলে আমাকে দেখো।
রক্তের ভেতর বাঁধা ছিল প্রেমের সাঁকো
আজকাল রাতের তৃতীয় প্রহরে
বিছানা খালি খালি লাগে
যদিও অগোছালো বই ছাড়া
আর কিছুই থাকে না বিছানায়।
রক্তের ভেতরে একদিন প্রেমের সাঁকো বাঁধা ছিল
রমণী প্রস্ত্তত ছিলো তখন তার বসন্তসম্ভার আর ঐশ্বর্য নিয়ে।
যাপিত জীবন খনন করেছে কতো না গর্ত
মাঝে মধ্যে জুড়ে দিচ্ছে ছদ্মবেশী শর্ত
গ্রীষ্মের রাজত্ব আজকাল বৃষ্টির রাজত্ব।
আঁধার টানেল থেকে বেরিয়ে আসতে পারছি না কিছুতেই,
কেমন জানি ভূতলবাসী,ভূতলবাসী হয়ে গেছি
সময়ের বধ্যভূমিতে আটকে গিয়ে
নিজের কাছে নিজেই হেরে গেছি।
মানুষের মাত্রাজ্ঞান, বাক্যজ্ঞান কমেছে
রাতের হাটে দিনের ফুটোপয়সা ও বিকোয় না
রাত চোখে কালি মাখতে ভালোবাসে
তবুও রাত জেগে রাতের ভুল নিয়ে
দিনের আলোয় চোখ রাখি।
দিনের ঘামে খুচরো পয়সার ঝনঝনানি শুনি
রাত আসার আগে রাতের জরিপ করি
অচেনা ছায়ায় নয় পড়ি পড়ি মন
ঠেকে শিখে জানা অজানা কতো জন।
মানুষের মাত্রাজ্ঞান বাক্যজ্ঞান কমেছে
অরন্য পেরিয়ে ছায়াপুরুষেরা যখন আসে
তখন মনে হয় সব কিছু আধাভৌতিক
স্পর্শের পাথর থেকে বুঝি কোনটা মৌলিক, কোনটা যৌগিক।
আলোর গয়না
কলসি এখন শূন্য
সুপেয় জল পাই কোথায়?
আশা ভরসায় এখন আর টলটল করে না কলসি
স্মৃতির বাতাসে বাজে না;
আনন্দ ধ্বনির মেঘে রং লাগলেই বাজবে সময়ের সিম্ফনি।
আকাশে কতোকাল দেখি না
কুচি কুচি সাদা মেঘ,
সব কিছুই ফাঁকা ফাঁকা লাগে:
পারি না কোনোভাবেই আনন্দময়
অতীত ও সম্ভাবনাময় বর্তমানকে একই সুতোয় বাঁধতে
শত্রুর শব্দহীন আনাগোনা টের পাই।
নাটের গুরু একের পর এক ঘটনা সাজায়:
ঘাড় ঘুরিয়ে ফেলে যখন তখন
সূর্যের শেষ আলোটুকু শরীরে মাখিয়ে
অন্ধকার দূর করতে গিয়েও ব্যর্থ হই
এদিক ওদিক করতে করতে আলোর গয়না তন্ন তন্ন করে খুঁজি।