মা আমার
মা আমার সবুজের তৃণভূমি,
বিশ্রামের মধুকূপি ঘাসের বিছানা,
মা আমার জলেশ্বরী,ঢেউ-তোলা আনন্দ-জোয়ার
মাছরাঙা পাখির বর্ণময় উড়াল,
মা আমার বক্ষ বিদীর্ণ করা কান্না ঝরঝর আষাঢ় মাস
আশ্বিনে মা আমার অসীমের চঞ্চল হাওয়া
অনন্ত বিহারী পৃথিবী ছোঁয়া মাঠ
কার্তিকে কুয়াশা ভেজা সকালে, দিপালী রোদ
ভোরের শিউলি ফুলে মহাজাগতিক মৌ
ফাল্গুনে মা আমার সুসজ্জিত রঙিন পলাশ
আদিম ভাষার শিরোনামহীন পাঠ…
মা আমার পুরাতন বাংলার ষড়ঋতু
লাল সবুজ পতাকাতলে অনন্ত আকাশ।
পুনর্জন্ম
০১.
পরম এক পুনর্জন্ম দাও
আমাকে!
আমি অববাহিত হবো ঐ পুনর্বার!
আমাকে সে স্পর্ধা দাও স্পষ্ট বলবার!
যেমন গোপন অগোপন প্রেমে থাকে
অনিবার,সেরকম অহংকার দাও।
বিচ্ছেদ অগ্নিতে আত্মা পুড়ছে মরমে
দুহাতে ভাঙছি ফের নিজের দহন,
কেবল একটিবার তোমাকে দেখবো
বলেই—একটা পুনর্জন্ম চাই আমি।
০২.
আমার পেছনে এক প্রস্তুর যুগের
হাওয়া বইছে অন্তহীন আফ্রিকার,
রক্তাক্ত দুপায়ে হেঁটে এসেছি নির্ভয়ে
ঐ বদ্ধ প্রণয়কূপ থেকে, অন্ধকার
ঘেষা জল বুদবুদ তুলে এনে আমি
বিষাদ শ্যামলে ভেজা,এঁকেছি তোমাকে
সব হারানো আমার গীতি-দীপঙ্কর …
০৩.
পরম এক পুনর্জন্ম দাও
আমাকে!
যেভাবে জন্মাবো আমি যতবার
এদেশ-ভূগোলে,তুমি শিশির-ভেজা
মরণোন্মুখ আমার অন্তর্দাহ বুকে,
স্বদেশের পরিচয়বাহী খরস্রোতা
সুতীব্র জলধি এক ভাসাবে কাঁদাবে
সৌম্য জলে ফুটে থাকা রক্তাভ হৃদয়…
০৪.
পরম এক পুনর্জন্ম দাও
আমাকে!
তোমাকে দেখবো অথৈ অবেলায় ভোর,
অন্ধ চোখ বিদ্ধ করে—আলোর ফিনকি
তুলেছি অদ্ব্বয় তীরে, তুমি জানলে না।
০৫.
তোমাকে রিওয়াইন করি বার বার
শুনি সেই অসামান্য শব্দের কুহক
তোমার প্রেমান্ধ বুক থেকে শুষে নিই
কর্পুর-সুবাস আর রহস্যের রসধ্বনি।
০৬.
সমুদ্র-জলের গুপ্তনিধি—অন্য জন্মে
তুমি আমারই থেকো—জনমে জনমে।
চিরউন্নত সে সময়ের কাছে
স্বপ্ন যার গুলিয়ে যায়
সে জানে জীবনের মানে
আগুন যাকে ছুঁয়ে যায়
বেঁচে থাকে সে দহনের গানে!
মৃত্যু যাকে টেনে নেয় কাছে
হাজারো সান্ত্বনায়—তবু না বাঁচে
যৌক্তিক হয় যদি প্রতিবাদ
চিরউন্নত সে সময়ের কাছে।