প্রতীজ্ঞা
হোমপেজে আসা মানুষের পুরাতন ছবিতে
অন্য অনেকে হাসি তামাশা খুঁজে পেলেও
সামনে আসা প্রত্যেকের ছবিতে আমি খুঁজে পাই,মায়া।
ড্যাব ড্যাব করে কেমন সরল চোখে সহজ ভঙ্গিতে
এক-একজন কঠিন দুনিয়ায় পা ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে বলছে,
দেখি তো কতটুক জল!
তারপর তলিয়ে যেতে যেতে বলছে,
এহ! এতটুক!এতে আমার কিচ্ছু হবে না!
এরপর মুখ উপচে নাক ছুই ছুই হলেও গলা টান করে বলছেই,
আমি উঠে আসব ঠিক,দেখিস।
নাক কপাল মাথা ডুবে গেলে শেষে এক হাত উঁচু করে
ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে কী যেন বলেই যাচ্ছে।
কথা না ফুটলেও ভাব ভঙ্গিতে ঠিক বোঝা গেলো কী বোঝাতে চাইছে।
আজকের পরিচিত এক একজনের পুরাতন ছবিতে
সেই মায়া মায়া সরলতা দেখি,
নিজেদের মোড়ক উন্মোচনের উৎসব দেখি,
টিপেটাপে আস্তে ধীরে নতুন অবয়ব হয়ে উঠার উৎসাহ দেখি।
আর দেখি রঙিন দুনিয়ার রঙ বেরঙের পানিতে
ক্রমশ ডুবে যেতে যেতে এক-একজন যেন বলছে,
এহ!এ তো কিছুই না!
আমি চাইলেই যে কোন সময় উঠে আসতে পারি।
কিন্তু এখন আমি চাইছি না এটাই যা।
তবে একদিন সব উৎসবের উৎসাহ কাটিয়ে শেষে মায়াতেই ফিরবো।
এ রঙিন ফাদে ফাঁক গলিয়ে একদিন ঠিক উঠে আসবো,
তুই দেখিস!
যোগ্যতা
এতদিন যোগ্যতা যে ঠিক কতটা বঞ্চিত হয়ে ছিল
তা যোগ্যদের যথাযথ জায়গায় পদায়ন দেখে
আজ সহজেই অনুমান করতে পারছে সকলে।
অযোগ্যতা আর দুর্নীতির রমরমার বাজারে
সততা, একাগ্রতা, মেধা যেন পরিহাসের বস্তু হয়ে দাড়িয়েছিল।
অর্থ, বিত্ত, বৈভব সামাজিক অবস্থানের মানদণ্ডে পরিণত হয়েছে,
কে কী করে টাকা কামাচ্ছে সে যেন দেখবার বিষয় নয়!
বিশ্বাস করেন, অন্যের টাকার পাহাড় হচ্ছে তা নিয়ে আমি
এবং আমার মতো আরও অনেকের কোনো মাথাব্যথা ছিল না
তবে মেধার যে মূল্যায়ন হচ্ছিল না; এই জিনিস টাই বড্ড পোড়াতো আমাদের!
আমার সাথে আর কাকে মিলিয়ে আমাদের বললাম জানি না,
তবে নিশ্চিত জানি আরও অনেকে, অনেকেই আছেন আমার দলে!
আমাদের পাল্লাটাই কিন্তু ভারী ছিল!
দায়িত্বশীল সব পদে আজ বিশাল জ্ঞান
এবং ততধিক বড় হৃদয়ের মানুষদের আসীন হতে দেখে
সত্যি যেন হাফ ছেড়ে বাঁচছি আমরা!
যদিও হঠাৎ হঠাৎ স্বপ্নের মতো লাগছে!
তবু এটাই সত্যি!এমনও সুদিন দেখবার ছিল ভাগ্যে!
হঠাৎই একদিন ঘুম থেকে উঠে যারা পায়ের নিচে
মাটি খুঁজে পাচ্ছেন না, তারা আশাহত হবেন না।
কেননা,
জীবদ্দশায় কৃতকর্মের সব ঋণ শোধ করে যাওয়ার সুযোগটাও কিন্তু কম না।
সময় থাকতেই যদি করে আসা পাপগুলো কাটাতে পারেন
সেটাও একটা বিশাল কাজ হবে!
হীরক রাজার দেশে এমন সুযোগ কিন্তু হরহামেশা মেলে না!
ইন্টারনেট
নিতান্তই পত্রিকার কাটতি ভালো নয়
নয়তো তোমায় চিনতে হয়
ডিজিটাল মিডিয়ায়!
বিস্ময়ে বুঁদ হয়ে
পড়ছি তোমাকে।
কী অদ্ভুত লেখো তুমি!
পেয়ালায় পুরনো শরাব
উর্ব্বশী ঠোঁটের মত্ততায়
ঘুঙুরের মৃদু আওয়াজের
ঘোর লাগা আবেশে
শুনেই যাচ্ছি,
শুনতেও কী ভীষণ ভালো
তোমাকে!
সর্বনাশটা হচ্ছে পত্রিকার কাটতি ভালো নয়।
নয়তো ডুবতে হতো না এ বয়সে
ডিজিটাল মিডিয়ায়।
আচ্ছা,
যার সাথে তুমি বাঁচ
তার কাছেও কি
-এক ই রকম বিস্ময়!
একই রকম সম্মোহনী
মায়া চোখের কবি কিংবা
তারও কি
-শব্দের কারিগর?
ভাগ্যিস পত্রিকার কাটতি ভালো নয়।
এনালগ সহিংসতা ভরে উঠবার আগেই
ডিজিটাল পরিচয়ের
শহর ভরে উঠুক অগুনতি কবিতায়!
নতুন কারুকে পড়ে
বুকে মোচড় দিলে দিক।
এটুকু অঘটন তো কবিতায়
থাকা চাই-ই চাই।