প্রাইম ইউনিভার্সিটির বাংলা বিভাগে প্রয়াত কবি সৈয়দ আবদুস সাদিক স্মরণ


প্রাইম ইউনিভার্সিটির বাংলা বিভাগের উদ্যোগে সদ্যপ্রয়াত কবি সৈয়দ আবদুস সাদিকের স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কবি-গবেষক বিলু কবীর। সভাপতিত্ব করেন বাংলা বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. রকিবুল হাসান। আলোচনা করেন অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের প্রিয় মুখ রাফসান সাবিদ, অ্যাড. সাইফুল ইসলাম অর্পণ, আবু সাঈদ খান, বাংলা বিভাগের অ্যালামনাই সভাপতি শান্ত শাহ, সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন। সৈয়দ আবদুস সাদিকের কবিতা পাঠ করেন হাসিবুর রহমান জয়, সেতু সমাদ্দার ও আলিমুল ইসলাম।

উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের শিক্ষক মো. আল আমান, তাহমিনা আক্তার নোভা ও তনিমা সুলতানা। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিলু কবীর বলেন, কবি সৈয়দ আবদুস সাদিক একসময় জাতীয় কবিতা পরিষদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি সারাজীবন কবিতা নিয়ে সাধণা করে গেছেন। ঢাকায় একসময় কাব্যঅঙ্গন তিনি চষে বেড়ালেও একটা পর্যায়ে তিনি কুমারখালীতে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। সেখানে নিজের বাড়ির নাম তাঁর কাব্যগ্রন্থের নামে’ তবুও বসবাস’ রাখেন। একজন মানুষ মনেপ্রাণে চিন্তাচেতনায় কী পরিমাণ কবিতার মানুষ হলে বাড়ির নামটি এভাবে করতে পারেন। এতেই তাঁর কাব্যিক শৈল্পিক মনের পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি নিজেকে কবিতার বাইরে কিছু ভাবেননি।সারাজীবন কবিতাতেই জীবন যাপিত করে গেছেন। আপাদমস্তক একজন নিবেদিত খাঁটি কবি ছিলেন। সভাপতির বক্তব্যে ড. রকিবুল হাসান বলেন, কবি সৈয়দ আবদুস সাদিক জাতীয় কোনো পুরস্কার লাভ না করলেও সাধারণ মানুষের ভালোবাসার কবি হয়ে উঠেছিলেন। তিনি সারাজীবন নিরবচ্ছিন্নভাবে কবিতাচর্চা করে গেছেন। কবিতার বাইরে নিজেকে ভাবেননি।

রকিবুল হাসান বলেন, কবি সৈয়দ আবদুস সাদিক কোন অভিমানে কী কারণে ঢাকা ত্যাগ করে নিজের জন্মস্থান কুমারখালীতে গিয়ে বাস করতেন, সেই রহস্য আজও অজানা রয়ে গেলো। তার কাছে এ বিষয়ে অনেকবার জানতে চাইলেও কোনো কিছুই বলেননি। বরাবরই চুপ থেকেছেন। অথচ একসময় এই কবি ঢাকা খুলনা দাপিয়ে বেড়িয়েছ্ন। তিনি আরও বলেন, কবি সাদিক মৃত্যুর পরে এ যেন নতুন এক সাদিক পাঠকের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন। পুরো কুষ্টিয়া শোকার্ত। ঢাকা কুষ্টিয়া খুলনা বিভিন্ন জায়গায় তাকে নিয়ে আলোচনা সভা হচ্ছে। তিনি যে কতোটা জনপ্রিয় ছিলেন, এখন তা অনুভূত হচ্ছে। কুষ্টিয়ায় রবীন্দ্রনাথ লালন মীর মশাররফের সঙ্গে এখন তাঁর নামটিও উচ্চারিত হবে।

রাফসান সাবিদ বলেন, কবি সৈয়দ আবদুস সাদিক প্রয়াণে বাংলা বিভাগ তাঁর স্মরণে আলোচনাসভায় আয়োজন করে দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছে। এটা আমাদের দায়িত্ব ছিল। তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ একজন কবি ছিলেন। মানুষ বেঁচে থাকে তাঁর কর্মে। সৈয়দ আবদুস সাদিক কাব্যচর্চার মাধ্যমে যে সব সৃষ্টিকর্ম রেখে গেছেন, তার মাধ্যমে তিনি পাঠকের হৃদয়ে যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকবেন।

আবু সাঈদ খান, বাংলা বিভাগ বর্তমানে যেসব কর্মকাণ্ড করছে এতে আমরা স্বপ্ন দেখি শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চায় প্রাইম ইউনিভার্সিটির অগ্রসরতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। আমাদের শিল্প সাহিত্য ইতিহাস এসব চর্চায় রাখতে হবে। বাংলা বিভাগ সেই কাজটি অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সঙ্গে করতে পারছে বলেই আমি মনে করি। কবি সৈয়দ আবদুস সাদিক স্মরণে এ আয়োজনটি করায় আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই।

অ্যাড. সাইফুল ইসলাম অর্পণ বলেন, আমাদের চিন্তা চেতনা মননের বিকাশে কবি সাহিত্যিকদের বড় ভূমিকা কাজ করে। সমাজ রাষ্ট্রের রুচিবোধের পরিচায়ক হয়ে দেশের শিল্প সাহিত্য চর্চা ও সৃষ্টি। এক্ষেত্রে কবি সৈয়দ আবদুস সাদিক তিনি আজীবন সাহিত্যচর্চা করে যে সব সৃষ্টি রেখে গেছেন, তা আমাদের জন্য বড় সম্পদ হয়ে থাকবে। তিনিও তাঁর সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন।